বেতন বৈষম্যের প্রতিবাদে কর্মবিরতিতে নীলফামারীর বিচার বিভাগীয় কর্মচারীরা
প্রতিনিধিঃ
লিটন সরকার, নীলফামারী।

বিচার বিভাগের স্বচ্ছ ও কার্যকর পরিচালনায় যাঁরা নীরবে, নিঃশব্দে কাজ করে যাচ্ছেন প্রতিদিন, তাঁদের জীবন আজও ঘিরে রেখেছে বঞ্চনা, বৈষম্য আর উপেক্ষার অন্ধকার।
তাঁরা বিচারক নন, প্রশাসনিক উচ্চপদেও নন—তাঁরা সহায়ক কর্মচারী। কিন্তু কোর্টের প্রতিটি ফাইলে, প্রতিটি শুনানিতে তাঁদের উপস্থিতি অবিচ্ছেদ্য। এই কর্মীদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত না করেই দেশের ন্যায়বিচার ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করা কতটা সম্ভব?
সারাদেশের ন্যায় আজ (০ ৫ মে) সোমবার সকাল ৯টা ৩০ থেকে ১১টা ৩০ পর্যন্ত নীলফামারী জেলা জজ আদালত চত্বরে প্রতীকী কর্মবিরতিতে অংশ নেন বাংলাদেশ বিচার বিভাগীয় সহায়ক কর্মচারীরা।
তাঁদের মুখে মুখে তখন একটি দাবি—“আমরা ন্যায়বিচার চাই, আমাদের জীবনে।”
দাবি শুধু বেতন বৃদ্ধির নয়—মানবিক স্বীকৃতিরও।
তাঁদের অনেকেই ২০ বছর ধরে কাজ করছেন, অথচ এখনও পদোন্নতির মুখ দেখেননি। বিদ্যমান জুডিসিয়াল সার্ভিস বেতন স্কেলের ১ম থেকে ৬ষ্ঠ গ্রেডের পরবর্তী ৭ম থেকে ১২ তম গ্রেটভুক্ত করা ও বিদ্যমান ব্লক পথ বিলুপ্ত করে যুগোপযোগী পদ সৃজনপূর্বক ও জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে পদোন্নতির সুযোগ রেখে স্বতন্ত্র নিয়োগ বিধি প্রণয়নের জন্য বহুবার আবেদন করলেও তা কেবল নথিপত্রেই সীমাবদ্ধ থেকেছে।
২০০৭ সালে বিচার বিভাগ প্রশাসনিকভাবে পৃথক হওয়ার পর সহায়ক কর্মচারীদের পদোন্নতি ও বেতন কাঠামোর উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সরকার।
তবে বাস্তবে এখনও সেসব সুবিধা বাস্তবায়নের দেখা মেলেনি। এই দীর্ঘ অবহেলায় ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটেছে নীলফামারীর কর্মবিরতিতে।
বাংলাদেশ বিচার বিভাগীয় সহায়ক কর্মচারী কমিটির রংপুর বিভাগীয় সহ-সভাপতি ও নীলফামারী জেলা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান প্রামানিক আক্ষেপ করে বলেন,
“বিচার বিভাগ মানেই শুধু বিচারক নন। আমরা না থাকলে আদালতের দৈনন্দিন কার্যক্রম চলত না। অথচ আমাদের কথা কেউ শোনে না।”
তাদের দাবি— বেতন বৈষম্য নিরসন করতে হবে।
প্রতিটি পদে সুনির্দিষ্ট পদোন্নতির সুযোগ চালু করতে হবে।
২০০৭ সালের পৃথকীকরণের পর ঘোষিত সুবিধাগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে।
এই কর্মসূচি ছিল প্রতীকী, তবে নেতৃবৃন্দের হুঁশিয়ারি—দাবি না মানা হলে কেন্দ্রীয় কর্মসূচি অনুযায়ী দেশজুড়ে কঠোর আন্দোলনে নামবেন তাঁরা।
একটি রাষ্ট্রের বিচার ব্যবস্থা শুধু বিচারক দিয়ে চলে না, তার নেপথ্যের অসংখ্য কর্মীর পরিশ্রমে তা সচল থাকে।
এই কর্মচারীদের প্রাপ্য অধিকার ও মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়াই হবে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার প্রথম ধাপ।
আরও পড়ুন
- বোরহানউদ্দিনে ইসলামী আন্দোলনের গণ সমাবেশ
- ভোলায় বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্যসহ ৫ কারবারি আটক
- বোরহানউদ্দিনে খাবারে নেশা খাওয়াইয়া অচেতন করে ২ লক্ষ টাকা চুরি অসুস্থ্য ৫ জন
Discover more from সমবানী
Subscribe to get the latest posts sent to your email.