লাখাই উপজেলার জনগণ কমিউনিটি ক্লিনিকের সেবা থেকে বঞ্চিত।
প্রতিনিধিঃ
রফিকুল ইসলাম, লাখাই (হবিগঞ্জ)

লাখাই উপজেলার জনগণ কমিনিটি স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ক্লিনিক গুলোতে অনিয়ম,দায়িত্বহীনতা ,চিকিৎসা যন্ত্রপাতি ঔষুধ সংকটসহ জনবলের অভাবে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে লাখাই বাসী।
সরকার দেশের প্রত্যন্ত গ্রামীন জনগোষ্টীর দ্বারগোড়ায় চিকিৎসা সেবা পৌছে দিতে হেলথ এন্ড পপুলার সেক্টর প্রোগ্রাম (এ এইচ পি এমপি) এর আওতায় গ্রাম ও ওয়ার্ডে কমিনিটি ক্লিনিক ১৯৯৮ সালে চালু করে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে লাখাই উপজেলার ৬ টি ইউনিয়নে ২০ টি কমিনিটি ক্লিনিক চালু করা হয়।
প্রত্যেক ক্লিনিকে ১ জন কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) এবং স্বাস্থ্য সহকারী বা পরিবার কল্যাণ সহকারী (এফডব্লিউ) থাকার কথা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়,সিএইচসিপি পদে ২০ জনের মধ্যে আছে ১৯ জন,স্বাস্থ্য সহকারী ২০ জনের মধ্যে আছে ১১।
ক্লিনিকে ২৭ ধরনের ওষুধ বিনামূল্যে রোগীদের দেওয়ার কথা থাকলেও চাহিদার তুলনায় ঔষুধের সরবরাহ কম হওয়ায় এলাকাবাসী অধিকাংশ ঔষুধ পান না। স্থানীয়রা অভিযোগ করছেন, স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা ইচ্ছেমতো সময়ে ক্লিনিক খোলেন এবং কখনো কখনো এক ঘন্টা বা তার কম সময়ের জন্য ক্লিনিক চালু রাখেন। কখনো আবার তারা আসেনই না, ফলে সেবা না পেয়ে ফিরে যেতে হয় অপেক্ষমাণ রোগীদের।
অথচ সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, সপ্তাহের ৬ দিন (শনিবার থেকে বৃহস্পতিবার) সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত কমিউনিটি ক্লিনিক খোলা থাকার কথা। কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) এবং স্বাস্থ্য সহকারী বা পরিবার কল্যাণ সহকারী প্রতিদিন ক্লিনিকে উপস্থিত থেকে সেবাপ্রদান করার কথা থাকলেও বাস্তব চিত্র এর সম্পূর্ণ বিপরীত। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ক্লিনিকের সেবা কার্যক্রমের সঠিক তদারকি না হওয়ায় এ সমস্যা দীর্ঘদিন ধরে চলছে।
শিবপুরের ক্লিনিকের পাশে বসবাসরত হাজী হেলাল উদ্দিন জানান,স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা কখন আসেন আর কখন যান, কেউ বলতে পারে না। তাদের ইচ্ছেমতো ক্লিনিক খোলা হয় কখনো এক ঘন্টা, কখনো আধা ঘন্টা, আর কখনো পুরোদমে বন্ধ থাকে। জিজ্ঞেস করলে তারা উপজেলায় কাজ আছে বলে চলে যান।
প্রসূতির প্রজনন স্বাস্থ্যে পরিচর্যার আওতায় অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের প্রসবপূর্ব (প্রতিরোধ টিকা দানসহ), প্রসবকালীন এবং প্রসবোত্তর সেবা, সাধারণ জখম, জ্বর, ব্যথা, কাটা, পোড়া, দংশন, বিষক্রিয়া, হাঁপানি, চর্মরোগ, কৃমি এবং চোখ, দাঁত ও কানের সাধারণ রোগের ক্ষেত্রে লক্ষণ ভিত্তিক প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা পাওয়ার কথা রয়েছে।
সময়মতো প্রতিষেধক টিকা; যেমন যক্ষ্মা, ডিপথেরিয়া, হুপিং কফ, পোলিও, ধনুষ্টঙ্কার, হাম, হেপাটাইটিস–বি, নিউমোনিয়া ইত্যাদিসহ কমিউনিটি ক্লিনিকে শিশু ও কিশোর কিশোরীদের প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার কথা। কিন্তু উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে লাখাই বাসী ঐসব চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। লাখাই উপজেলার কমিউনিটি ক্লিনিকের এমন অনিয়ম এবং দায়িত্বহীনতার ফলে স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে গ্রামের হাজার হাজার সাধারণ মানুষ।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম নিশ্চিত করা। হেলথ প্রোভাইডার লিপীকা ইয়াসমিন বলেন, মাসের শেষে কিছু ঔষুধের সংকট হয়,বিশেষ করে চুরকানির ঔষুধের সংকট বেশী। উপজেলা স্বাস্থ্য পঃ পঃ কর্মকর্তা ডাঃ কাজী শামসুল আরেফীন জানান, এ রকম অভিযোগ কয়েকটি ক্লিনিকের বিরোদ্ধে পেয়েছি দায়িত্বে অবহেলার কারণে ১ জন হেলথ প্রোভাইডারকে কারণ দর্শনের জন্য ৩ বার নোটিশ দেওয়া হয়েছে। রুটিন অনুযায়ী ভিজিটে আমি যাই।
পরবর্তীতে গাফলতির যদি কোন অভিযোগ আসে তাহলে সাথে সাথে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তারপরও অনিয়ম দূর করতে এবং তদারকি বাড়াতে আমরা চেষ্টা করব। জনবল সংকটের ব্যাপারে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে। গুণগত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আরও পড়ুন
- বোরহানউদ্দিনে ইসলামী আন্দোলনের গণ সমাবেশ
- ভোলায় বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্যসহ ৫ কারবারি আটক
- বোরহানউদ্দিনে খাবারে নেশা খাওয়াইয়া অচেতন করে ২ লক্ষ টাকা চুরি অসুস্থ্য ৫ জন
Discover more from সমবানী
Subscribe to get the latest posts sent to your email.