কাউখালীতে দিনমজুর ওমর আলী পলিথিনে ঘরে জীবনযাপন
প্রতিনিধিঃ
রিয়াদ মাহমুদ সিকদার, কাউখালী, পিরোজপুর।
পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার ওমর আলী পেশায় একজন দিনমজুর। ৫ সদস্যদের পরিবার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করেন একটি পলিথিনের ছাপরা ঘরে।
উপজেলার সদর ইউনিয়নের বাসুরী গ্রামের মরহুম মোহাম্মদ আলী খানের ছেলে দিনমজুর ওমর আলী বাবার রেখে যাওয়া এক টুকরো জমিতে দীর্ঘদিন পলিথিনের জরাজীর্ণ ছাপারা ঘরে বসবাস করছে।
তিন বছর আগে পলিথিন ও প্লাস্টিকের বস্তা দিয়ে ঘর তৈরি করে কোন মতে স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে ঝড় বৃষ্টির ভিতর জীবনের ঝুঁকির ভিতরে বসবাস করছে।
দিনমজুর ওমর আলী (৪৮) ভ্যান চালিয়ে কোনো রকম সংসার চলে মাত্র। হতদরিদ্র এ দম্পতির জীবন চলেছে খুবই কষ্টের মধ্য দিয়ে।
ওমর আলীর স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। টাকার অভাবে এক ছেলেকে লেখাপড়া করাতে পারেনি। বর্তমানে এক ছেলে ও এক মেয়েকে সরকারি স্কুলে লেখাপড়া করে।
থাকার জায়গাটি দেখলেই মনে হয় এখানে কোন মানুষ থাকতে পারে না। পলিথিনের ছাপরা ঘরেই তারা মানবেতর জীবন যাপন করে আসছেন। এলাকার বিত্তশালীদের নজরে পড়েনি। এগিয়ে আসেনি কেউ।
ওমর আলী জানান তার একটা ভ্যান ছিল হঠাৎ করে তার ভাই অসুস্থ হয়ে পড়লে ওই ভ্যান বিক্রি করে ভাইয়ের চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। প্রতিদিন দিনমজুরি কাজ পেলে তাহলে তারের আহার জোটে। কাজ না পেলে কোন বেলা না খেয়ে থাকতে হয়।
ওমর আলীর ইচ্ছা স্ত্রী, সন্তান নিয়ে অন্তত থাকার ঘরটিই বসবাসের উপযোগী হলে শান্তিতে ঘুম দিতে পারতো খেয়ে না খেয়ে। শীতের তীব্রতা আর গ্রীষ্মের প্রখরতা এবং বর্ষায় বৃষ্টিতে ভিজে বাধ্য হয়েই কোন রকম দিনাতিপাত করছে এই পরিবারটি। দিনমজুরের কাজ করে তাদের সংসারের খরচই চালাতে পারেন না। যার ফলে ঘরও উত্তোলন করতে পারেন না।
সরেজমিনে দেখা যায়, ‘সভ্যতার এ যুগে মানুষ এমন ঘরে থাকাটা বিরল। বলতে গেলে একদম জীর্ণ-শীর্ণ অবস্থায় কয়েকটি বাঁশের সঙ্গে টুকরো টুকরো পলিথিন, ফেলে দেয়া প্লাস্টিকের বস্তা দিয়ে ঘেরা ঘরটিতে থাকছেন তারা। ঘরের ভিতরে ঢুকলেই দেখা যায় বসবাস করার অনুপযোগী।
বৃষ্টি হলেই সব পানি ঘরের মেঝেতেই পড়বে। মানুষের পাড়ায় এ যেন অমানবিক চিত্র। এমন মানবেতর জীবনযাপনের বিষয়ে জানতে চাইলে ওমর আলী স্ত্রী বলেন, ‘আমার স্বামী দিনমজুর দিন আনে দিন খায়। কাজ করলে পেটে ভাত জুটে। তিনটা সন্তান আছে আমাদের।
তাদের অসুখ হলে ভালোমতো চিকিৎসা করাতে পারি না। থাকার জায়গাটা ছাড়া আর কোন সম্বলও নাই। বিত্তবানদের সহযোগিতায় যদি ঘরটিতে থাকার মতো সংস্কারের ব্যবস্থা হয় তাহলে তিনটি সন্তান নিয়ে একটি মাথা গোঁজানোর পরিবেশ হতো।
সংবাদকর্মীদের মাধ্যমে জানতে পেরে কাউখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সজল মোল্লা দিনমজুর ওমর আলীর বাড়িতে ছোটে যান এবং তাৎক্ষণিকভাবে ঘর তৈরি করার জন্য টিনের ব্যবস্থা করে দেন। এবং ঘরটি মেরামত করার জন্য আশ্বাস প্রদান করেন।
কাউখালী উপজেলা সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ওমর আলী সমস্যার কথা শুনে আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবগত করেছি সরকারিভাবে একটি ঘর তৈরি করার জন্য।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সজল মোল্লা জানান, বিভিন্ন মাধ্যমে বিষয়টি আমি জানতে পেরে তাৎক্ষণিকভাবে ওমর আলী বাড়িতে ছুটে যায়। তাদের বসত ঘরের অবস্থা দেখে আমার খুবই খারাপ লেগেছে। তখনই আমি সিদ্ধান্ত নেই ওমর আলীকে একটি ঘরের ব্যবস্থা করে দেব।
আরও পড়ুন
- বোরহানউদ্দিনে ইসলামী আন্দোলনের গণ সমাবেশ
- ভোলায় বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্যসহ ৫ কারবারি আটক
- বোরহানউদ্দিনে খাবারে নেশা খাওয়াইয়া অচেতন করে ২ লক্ষ টাকা চুরি অসুস্থ্য ৫ জন
শেয়ার:
- Click to share on Facebook (Opens in new window) Facebook
- Click to share on X (Opens in new window) X
- Click to share on LinkedIn (Opens in new window) LinkedIn
- Click to share on Reddit (Opens in new window) Reddit
- Click to share on X (Opens in new window) X
- Click to share on Tumblr (Opens in new window) Tumblr
- Click to share on Pinterest (Opens in new window) Pinterest
- Click to share on Pocket (Opens in new window) Pocket
- Click to share on Threads (Opens in new window) Threads
- Click to share on WhatsApp (Opens in new window) WhatsApp
Discover more from সমবানী
Subscribe to get the latest posts sent to your email.
