মঙ্গলবার, ২৪শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১০ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শ্রীমঙ্গলের ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে জনবল কম থাকায় সেবা পাচ্ছেন না ভোগান্তির শিকার রোগীরা

০ টি মন্তব্য 18 ভিউ 12 মিনিট পড়ুন
অ+অ-
রিসেট করুন

প্রতিনিধিঃ

মনজু বিজয় চৌধুরী, মৌলভীবাজার
print news | শ্রীমঙ্গলের ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে জনবল কম থাকায় সেবা পাচ্ছেন না ভোগান্তির শিকার রোগীরা | সমবানী

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে কাঙ্খিত সেবা পাচ্ছেন না রোগীরা। নামে ৫০ সয্যা হাসপাতাল হলেও ৫০ সয্যা হাসপাতালের জন্য প্রয়োজনীয় জনবল না থাকায় রোগীদের চিকিসা সেবা দিতে হিমসিম খেতে হচ্ছে চিকিসকদের।

স্থাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২৩ জন ডাক্তার থাকার কথা থাকলেও মাত্র ১০ ডাক্তার দিয়ে চলছে চিকিৎসা কার্যক্রম। সাব এসিস্ট্যান্ট কমিউনিটি মেডিকেল অফিসাররা প্রাথমিক চিকিৎসা দিচ্ছেন রোগীদের। সামন্য রোগ নিয়ে আসা রোগীদেরকেও চিকিৎসার জন্য পাঠানো হচ্ছে জেলা হাসপাতালে। ডাক্তার ছাড়াও বিভিন্ন পদ শুন্য থাকায় চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগীরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।

শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অফিস সূত্রে জানা যায়, ৫০ সয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের গড়ে প্রতিদিন জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নেন শ্রীমঙ্গল প্রায় ৯০ জন রোগী, আউটডোরে বিভিন্ন রোগ নিয়ে চিকিৎসা সেবা নেন প্রায় ৩০০ জন আর হাসপাতালে প্রতিদিন প্রায় ৪০ জন রোগী ভর্তি থাকেন। হাসপাতালে জুনিয়র কনসালটেন্ট (বিষয়হীন) ৬ জন থাকার কথা থাকলেও রয়েছে মাত্র ১ জন আর মেডিকেল অফিসার/সহকারী সার্জন ৭ জনের জায়গার রয়েছেন মাত্র ১ জন।

সিনিয়র স্টাফ নার্স পদে শূন্য রয়েছে ৭টি, ফার্মাসিস্ট পদে শূন্য রয়েছে ১টি, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (এসআই) পদে শূন্য রয়েছে ১টি, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (রেডিওগ্রাফী) পদে শূন্য রয়েছে ১টি, পরিসংখ্যানবিদ পদে শূন্য রয়েছে ১টি, কার্ডিওগ্রাফার পদে শূন্য রয়েছে ১টি, কম্পিউটার অপারেটর পদে শূন্য রয়েছে ১টি, অফিস সহকারী কাম ডাটা এন্ট্রি অপারেটর পদে শূন্য রয়েছে ১টি, স্বাস্থ্য সহকারী পদে শূন্য রয়েছে ৪টি, হেলথ এডুকেটর পদে শূন্য রয়েছে ১টি, অফিস সহায়ক পদে শূন্য রয়েছে ২টি, ওয়ার্ড বয় পদে শূন্য রয়েছে ২টি, আয়া পদে শূন্য রয়েছে ১টি, বাবুর্চি পদে শূন্য রয়েছে ১টি এবং পরিচ্ছন্নতা কর্মী পদে ৩টি পদ শূন্য রয়েছে।

হাসপাতালের এক্সরে মেশিন, আলট্রাসনোগ্রাম মেশিন ও ইসিজি মেশিনটি অকেজো পড়ে আছে।
এ ছাড়া চিকিৎসক সংকটের কারণে উপজেলার ৪টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের ৪জন উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসারকে দিয়ে ইমার্জেন্সি ডিউটি করানো হয়। এতে করে ব্যাহত হচ্ছে তৃণমূলে স্বাস্থ্য সেবাও।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের ২য় তলায় অবস্থিত নারী, শিশু ও পুরুষ ওয়ার্ডের কোন সিট খালি নেই। হাসপাতালের ডাক্তারদের চেম্বারের বাহিরে রোগীদের দীর্ঘ লাইন। বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের পরিবর্তে সাব এসিস্ট্যান্ট কমিউনিটি মেডিকেল অফিসাররা প্রাথমিক চিকিৎসা দিচ্ছেন রোগীদের।

বহিঃবিভাগে ডাক্তার দেখাতে আসা রোগীরা কাঙ্খিত চিকিৎসক না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন। ডাক্তারের নাম লিখা রুমগুলোর বেশীরভাগেই ডাক্তারের উপস্থিতি নেই। সিনিয়র স্টাফ নার্স ও কমিউনিটি মেডিকেল অফিসাররা বহিঃবিভাগে আসা রোগীরের চিকিৎসা দিচ্ছেন।

একাধিক রোগীরা জানান প্রায় ২ ঘন্টা ধরে আমার বাচ্চাটারে নিয়ে আছি। বাচ্চার কানের সমস্যা। এখানে কানের ডাক্তার নাই।

সকাল ১০ টায় হাসপাতালে আইছিলাম। এখনো এক ঘন্টা ধরি লাইনে দাড়ানি আছি। অসুস্থ শরীর নিয়া আইয়া আরো অসুস্থ হয়ে যাবে। অনেক মানুষের ভিড়। আমার স্ত্রী গর্ভবতী। এখানে আজ এসে জানলাম গাইনী ডাক্তার কেউ নাই। আমরা গরীব মানুষ প্রাইভেট ডাক্তার দেখানোর টাকা নাই। এখন অন্য কোন ডাক্তার দেখিয়ে যাবো। তাই এখনো বসে আছি।

হাসপাতালে ভর্তি থাকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলেন, হাসপাতালে তিন দিন ধরে ভর্তি আছি। নার্স রা আসেন বার বার, ডাক্তার খুব আসে। এখানে বিদ্যুৎ গেলে ফ্যান বন্ধ থাকে। অন্ধকার থাকে। খুব অসস্থি লাগে। টয়লেট এর অবস্থা খুবই খারাপ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সিনিয়র নার্স বলেন, প্রায় ২০ -২৫ দিন ধরে গাইনি চিকিৎসক নেই। হাসপাতালে সিজার বন্ধ, গাইনি ডাক্তার না থাকায় গর্ভবতী নারীরা এসে ঘুরে যান। আমাদেরও এটা খারাপ লাগে। ডাক্তার ও নার্সের সংখ্যা রোগীর তুলনায় কম হওয়ায় আমরা খুবই চাপের মধ্যে আছি। আমাদের অভারটাইম ডিউটি করতে হয়, একসাথে অনেক রোগীকে চিকিসা দেওয়া কষ্ট হয়ে যায়।

জরুরি বিভাগের দায়িত্বে থাকা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলেন, মানুষ কত ধরনের রোগ নিয়ে আসে। আমরা এখন শুধু প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছি, মৌলভীবাজার রেফার করে দিচ্ছি।

এ বিষয়ে শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সিনথিয়া তাসমিন বলেন, ৫০ সয্যর জনবল না থাকায় প্রচুর চাপ যাচ্ছে। ২৩ জন চিকিৎসক এর জায়গায় আছে মাত্র ১০ জন। প্রচুর রোগী চিকিৎসা নিতে আসছে।

জনবল চেয়ে ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি পাঠিয়েছি। জনবল নিয়োগ হলে রোগীদের আরও ভালো সেবা দেওয়া যাবে। হাসপাতালে জেনারেটর থাকলেও তেল বরাদ্ধ না থাকায় বিদ্যুৎ চলে গেলে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।

আরও পড়ুন


Discover more from সমবানী

Subscribe to get the latest posts sent to your email.

আর্কাইভ
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১৩
১৫১৬১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
৩০  

এই ক্যাটাগরির আরো খবর

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকিজ ব্যবহার করে। আমরা ধরে নেব আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি চাইলে অপ্ট-আউট করতে পারেন৷ গ্রহণ করুন আরও পড়ুন

Discover more from সমবানী

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading