রবিবার, ২৩শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৯ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ফুলবাড়িয়ায় অবৈধ ১৫০ স’মিলে রমরমা বাণিজ্য: রাজস্ব ফাঁকিসহ পরিবেশের ক্ষতি

০ টি মন্তব্য 10 ভিউ 10 মিনিট পড়ুন
অ+অ-
রিসেট করুন

প্রতিনিধিঃ

জাহাঈীর আলম, ময়মনসিংহ
print news | ফুলবাড়িয়ায় অবৈধ ১৫০ স’মিলে রমরমা বাণিজ্য: রাজস্ব ফাঁকিসহ পরিবেশের ক্ষতি | সমবানী

ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলায় সরকারী অনুমোদন ছাড়াই প্রায় ১৫০টি স’মিলে (করাত কল) চলছে রমরমা অবৈধ বাণিজ্য। অনুমোদনহীন এসব স’মিলে মাসের পর মাস চলছে কাঠ চেরাই। এতে সাবাড় হচ্ছে বনজ, ফলদসহ নানা প্রজাতির গাছ। এসব দেখার যেন কেউ নেই। ফলে একদিকে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে, অন্যদিকে সরকার প্রতিবছর হারাচ্ছে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব। এসব করাত কল সরকারি আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছে স্থানীয় সচেতন মহল।

বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বন আইন ১৯২৭ ও বিধিমালা ২০১২ অনুযায়ী কোনো স’মিল মালিক লাইসেন্স না নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবে না। লাইসেন্স নেয়ার পর থেকে প্রতিবছর তা নবায়ন করতে হবে। বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলায় একটি পৌরসভাসহ ১৩টি ইউনিয়নে প্রায় ১৫০ টি করাত কল রয়েছে। তার মধ্যে ৪টি করাত কলের লাইসেন্স রয়েছে। কিন্তু সেগুলোর নবায়নও হয়নি ঠিকমতো। আর বাকি গুলো করাত কলের নেই কোনো অনুমোদন বা লাইসেন্স।

ফলে নবায়নের তো প্রশ্নই আসে না। পৌর সদরের ভালুকজান বাজারে করাত কলের হাট বললেই চলে,প্রতিটি বাজারের মোড়ে মোড়ে এবং বাজারের পাশে বিভিন্ন করাত কল ঘুরে দেখা গেছে, কেউ জায়গা ভাড়া নিয়ে, আবার কেউবা নিজস্ব জায়গায় যত্রতত্র করাত কল স্থাপন করে বছরের পর বছর ব্যবসা পরিচালনা করছেন।

স’মিল চালানোর ক্ষেত্রে সরকারের সুনির্দিষ্ট বিধান থাকলেও এ ফুলবাড়িয়া উপজেলার চিত্র একেবারেই বিপরীত। কোনো কোনো মালিক ১৫-২০ বছর যাবৎ অনুমোদন ছাড়াই স’মিল চালাচ্ছেন। লাইসেন্সবিহীন এসব স’মিল বন্ধ করার কোনো উদ্যোগও চোখে পড়েনি। তবে এসব স’মিল চত্বরে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ থরে থরে মজুত করে রাখা হয়েছে। কাক ডাকা ভোর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত এসব স’মিলে বিরামহীন চলছে কাঠ চেরার কাজ।

জানা যায়,বন বিভাগের গার্ডরা প্রতি মাসে অবৈধ স’মিল থেকে মাসিক মাসোয়ারা নিয়ে যাচ্ছে। লাভবান হচ্ছে বন বিভাগ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ পরিবেশ।

আরও পড়ুন

আরও জানাযায় যে,বনভুমির সীমানা থেকে ১০ কিলোমিটারের মধ্যে কোন করাত কল পরিচালক করা যাবে না।

এ বিষয়ে কালাদহ ইউনিয়নের বিদ্যানন্দ দীঘি এলাকার স’মিল যৌথ মালিক বুলবুল হোসেন ও কাজল মিয়াদ্বয় অনুমোদন বিহীনভাবে দীর্ঘদিন ধরে তারা তাদের স’মিল চালাচ্ছেন। এতে কোনো সমস্যা হয়নি। কেউ লাইসেন্স করার বিষয়ে কখনো কিছু বলেনি। কেউ বিষয়টি জানালে লাইসেন্স করার উদ্যোগ নেয়া হতো।পৌরসভার ভালুকজান স মিলের বাজার এলাকার বলে ক্ষেত একাধিক সমাজ সেবক বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে আমাদের স’মিল ব্যবসা চলছে।এই স’মিলের কারনে আমরা বাসায় ঘুমাতে পারি না।এই সবের কারনে ছাত্র-ছাত্রীদের পড়ালেখার সমস্যা হয়। একাধিক বার বলেছি তারা কোন কেয়ার করে না আর গালিগালাজ করে।

ফজলুল হক বলেন,অনুমোদনের জন্য আবেদন করেছি।এখনো পাইনি। স’মিল যখন চালু করেছি, তা তো বন্ধ রাখতে পারি না।

পৌরসভার ভালুকজান বাজারের বৈধ করাত কলের প্রোপ্রাইটর নেকবর আলী আক্ষেপ করে বলেন,অনেক টাকা খরচ করে লাইসেন্স করেছি।লাইসেন্স করে কি লাভ অবৈধ করাতকলের মালিকরা অবৈধ ভাবে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।

আব্দুল কুদ্দুস বলেন,আমরা ফুলবাড়িয়া উপজেলায় চার টি করাত কলের লাইসেন্স আছে।বাকিরা সব অবৈধ। বিষয়টি প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

তবে উপজেলার সচেতন মহল মনে করেন, এভাবে সরকারের অনুমোদন বিহীন স’মিল (করাত কল) চলায় একদিকে পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে, বন উজাড় হচ্ছে, অন্যদিকে সরকার হারাচ্ছে মোটা অঙ্কের রাজস্ব। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া জরুরি।

ফুলবাড়িয়ায় বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এমদাদুল হক বলেনকে একাধিক বার মোঠো ফোনে যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

ফুলবাড়িয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাবেরী জালাল জানান, অভিযোগ পেলাম অবৈধ স’মিল বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন


Discover more from সমবানী

Subscribe to get the latest posts sent to your email.

আর্কাইভ
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
১০১১১৩
১৫১৬১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭
৩০৩১  

এই ক্যাটাগরির আরো খবর

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকিজ ব্যবহার করে। আমরা ধরে নেব আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি চাইলে অপ্ট-আউট করতে পারেন৷ গ্রহণ করুন আরও পড়ুন

Discover more from সমবানী

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading