ভান্ডারিয়ায় ঘূর্ণিঝড় রেমালে বিধ্বস্ত মাদ্রাসা খোলা আকাশের নিচে পাঠদান
প্রতিনিধিঃ
আল আমীন আহমেদ ভান্ডারিয়া, পিরোজপুর

পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ায় রাজপাশা দারুশ শরীয়াত দাখিল মাদ্রাসার টিনশেড ভবনটি ঘুর্ণিঝড় রেমেলে পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়ে যায়।
বিধ্বস্ত মাদ্রাটির ভবন সংস্কার না হওয়ায় শিক্ষার্থীদের নিয়মিত পাঠদান চলছে খোলা আকাশের নিচে,
এতে চরম বিপাকে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা। বিপর্যস্ত মাদ্রাসা ভবনটি দ্রুত নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন ভূক্তবোগি শিক্ষক-শিক্ষার্থী,অভিভাবক ও এলাকাবাসী।
জানা গেছে, ভান্ডারিয়া উপজেলার ধাওয়া ইউনিয়নে রাজপাশা গ্রামে ১৯৮৫ সালে এলাকার শিক্ষানুরাগী মিলে রাজপাশা দারুশ শরীয়াত দাখিল মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠার দুই বছর পর ১৯৮৭ সালে প্রতিষ্ঠানটি এমপিও হয়ে সুনামের সাথে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। সরকারি বরাদ্দে একটি টিনশেড শ্রেণিকক্ষ নির্মাণ হলে সুষ্ঠ ভাবে পাঠদান পরিচালিত হয়ে আসছিল।
মাদরাসাটিতে শিশু শ্রেণি থেকে দাখিল পর্যন্ত পাঠদান করা হয়। পার্শ্ববর্তী উপজেলা কাঠালিয়া সহ ধাওয়া ইউনিয়নের অন্তত ২৩২ শিক্ষার্থীর নিয়মিত পাঠদান চলছে।
গত ২৭ মে ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে মাদরাসায় বহু পুরানো ছয় কক্ষ বিশিষ্ট একটি মাত্র লম্বা টিনের ঘর সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়ে যায়।
টিনশেড ভবনে পাঁচটি শ্রেণি কক্ষ, সুপার ও শিক্ষক মিলনায়তনসহ সকল কক্ষের আসবাবপত্র সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়। পরে অন্য প্রতিষ্ঠান থেকে বেঞ্চ ও চেয়ার এনে লেখাপড়ার কার্যক্রম চালিয়ে নিতে খোলা আকাশের নিচে পাঠদান করা হচ্ছে। ফলে মাদ্রাসার ভবন ছাড়া কোমল মতি শিশুরা যেমনি রোদেপুরে তেমনি দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় চরম বিপাকে পড়ড়ছে।
এতে কিছু শিক্ষার্থী মাদ্রাসা ছেড়ে চলে গেছে অন্য প্রতিষ্ঠানে। ঝড় বৃষ্টির কারনে পাশ্ববর্তী ৫২নম্বর রাজপাশা আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিত্যাক্ত ভবনে পাঠদান করালেও সে খানে রয়েছে বাঁধা বিপত্তি। তাই শিক্ষার্থীরা পাঠদান করতে বাধ্য হচ্ছে খোলা আকাশের নিচে।
মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. হাবিবুর রহমান বলে, রেমালে মাদরাসাটি বিধ্বস্ত হওয়ার পর থেকে খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করতে হচ্ছে। বৃষ্টি হলে পার্শ্ববর্তী সাইক্লোন সেল্টারের নিচে ক্লাশ করতে গেলে বাঁধা বিপত্তি আসে। রোদ আর গরমে ক্লাশ করতে খুবই আসুবিধা হয়। সামনে আমাদের বার্ষিক পরীক্ষা। ক্লাস না করলে আমরা পিছিয়ে পড়বো।
নবম শ্রেনির শিক্ষার্থী লামিয়া আক্তার বলে, এখানে লেখা পড়ার কোন পরিবেশ নেই। শ্রেণিকক্ষ না থাকায় অর্ধ বার্ষিক পরীক্ষা দেয়া সম্ভব হয়নি,সামনে বার্ষিক পরীক্ষা এখন ঠিক মতো পাঠদান না হলে আমাদের শিক্ষা জীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।
মাদ্রাসার অভিভাবক আব্দুর কুদ্দুস ও রুবিনা বেগম বলেন,‘অনেক বছরের পুরানো একটি মাদ্রাসা, পড়াশুনা ও ফলাফলেও ভালো। এ কারণে আমার মেয়েকে এই মাদ্রাসায় ভর্তি করেছি। অথচ মাদ্রাসাটিতে কোনো পাকা ভবন নাই, খোলা আকাশের নিচে ক্লাশ করতে হচ্ছে। আমাদের পাকা ভবনে শ্রেণী কক্ষ নির্মাণ জরুরি।
মাদ্রাসার সুপার মাওলানা মোঃ নূরুল ইসলাম বলেন, মাদ্রাসাটিতে একটি মাত্র টিশেড ভবন ছিল।একই ভবনে প্রশাসনিক কার্যক্রম ও পাঠদান হতো। ঘূর্ণিঝড় রেমেলে মাদরাসাটি দুমড়েমুচড়ে যায়। যে কারনে শিক্ষার্থীদের খোলা মাঠে পাঠদান করানো হচ্ছে। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসার সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। দ্রুত একটি ভবন না হলে দ্বীনি এলেম বন্ধ হয়ে যাবার আশঙ্কা রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী আফিসার মো. ইয়াছিন আরাফাত রানা বলেন,‘সুপার সাহেব তাঁকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শিক্ষার্থীরা যাতে পাঠদানে ফিরতে পারে খুব শিগগির তার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন
- বোরহানউদ্দিনে ইসলামী আন্দোলনের গণ সমাবেশ
- ভোলায় বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্যসহ ৫ কারবারি আটক
- বোরহানউদ্দিনে খাবারে নেশা খাওয়াইয়া অচেতন করে ২ লক্ষ টাকা চুরি অসুস্থ্য ৫ জন
Discover more from সমবানী
Subscribe to get the latest posts sent to your email.