রবিবার, ২৩শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৯ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিমক্ষেতে পচন রোগ, দুশ্চিন্তায় কৃষক

০ টি মন্তব্য 12 ভিউ 9 মিনিট পড়ুন
অ+অ-
রিসেট করুন

প্রতিনিধিঃ

জাহাঈীর আলম, ময়মনসিংহ
print news | শিমক্ষেতে পচন রোগ, দুশ্চিন্তায় কৃষক | সমবানী

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার রাজিবপুর ইউনিয়নের ভাটিচন্দ্রপুর গ্রামের শিম চাষিদের অবস্থা এমনই। গ্রামটিতে প্রতিবছর শিমের বাম্পার ফলন হয়। ফলে আগ্রহ নিয়ে চাষাবাদ করেন কৃষকরা। কিন্তু এবার চিত্র পুরো ব্যতিক্রম। ক্ষেতে সারাক্ষণ শ্রম দিয়েও বাম্পার ফলন তো দূরের কথা; খরচ উঠানো নিয়েই দুশ্চিন্তায় তারা।

সরেজমিনে দেখা যায়, পাতা, ফুলসহ শিম ঝরে যাওয়া থেকে রক্ষা পেতে কৃষকদের কেউ কীটনাশক দিচ্ছেন, আবারো কেউ গাছের শুকনা পাতা ছাঁটাই করছেন। গাছের গোড়ায় প্রয়োজন অনুযায়ী পানি দেওয়াসহ পরিচর্যার কাজও করছেন কয়েকজন। ফুল আর পাতা ঝরা রোগের কারণে বাম্পার ফলন না হওয়ার আশঙ্কা নিয়ে এক কৃষক আরেক কৃষকের সঙ্গে ক্ষেতের আইলে বসে আলোচনা করছেন।

কৃষকরা জানান, এই গ্রামে চার শতাধিক কৃষক শিম চাষের সঙ্গে যুক্ত। প্রতিবছর অনেকে ধারদেনা করে চাষাবাদ করেন। ফসল বিক্রি করে সেই টাকা পরিশোধ করেন। এ বছর ফুল ফোঁটার সঙ্গে সঙ্গে অনেক গাছের পাতা, ফুল ও ছোট অবস্থায় শিম ঝরে যাচ্ছে। কীটনাশক ও ওষুধ ছিটিয়েও থামানো যাচ্ছে না। এবার ক্ষতিগ্রস্ত হলে আগামীতে অনেকেই শিম চাষে মুখ ফিরিয়ে নেবেন।

কৃষক বাবুল চন্দ্র রায় জানান, ৭৫ শতাংশ জমিতে চ্যাপ্টা-লম্বা প্রকৃতির দেশীয় প্রজাতির শিম চাষ করেছেন। এই শিমটি খেতে দারুণ স্বাদ, ফলে বাজারে ভালো দাম পাওয়া যায়। এই শিম বাজারে ১৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি করা যায়। কিছুদিন পর বাজারে শিমের সরবরাহ বাড়বে। তখন দাম অনেক কমে যাবে। এখনো শিম বড় হয়নি, ফুল পঁচে মাটিতে পড়ে যাচ্ছে। পাতাও ঝড়ে যাচ্ছে। গাছের ডালগুলোও মরে যাচ্ছে। স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তা ও বাজারের ডিলারদের পরামর্শে কীটনাশক ও ওষুধ ছিটানো হচ্ছে। কিন্তু তাতেও লাভ হচ্ছে না।

তিনি আরো বলেন, গত বছর একই পরিমাণ জমিতে ৬০ মণের বেশি শিম উৎপাদন হলেও এবার ৩০ মণও হবে না বলে মনে হচ্ছে। ফলে চরম ক্ষতিগ্রস্ত হবো।

কৃষক আব্দুস সালাম মন্ডল জানান, এই গ্রামে উৎপাদিত শিম ময়মনসিংহসহ সারাদেশের পাইকারদের কাছে বিক্রি করা হয়। তারা ট্রাকভর্তি করে নিয়ে গিয়ে খুচরা বিক্রেতাদের কাছে বিক্রি করেন। এবার ১ একর ৪০ শতাংশ জমিতে শিম চাষ করেছি। শিম চাষের আগে একই জমিতে শসা চাষ করেছি। শসার ওই মাচায় শিম আবাদের ফলে খরচ কিছুটা কমেছে। কিন্তু শিম গাছের অনেক ফুল ও পাতা পঁচে-শুকিয়ে পড়ে যাচ্ছে। ফলে এবার বাম্পার ফলন হবে বলে মনে হয় না।

কৃষক শামসুজ্জামান ১ একর ২০ শতাংশ জমিতে শিম আবাদ করেছেন। তারও অনেক গাছ একই রোগে আক্রান্ত হয়েছে। ফলে ফলন কম হওয়ার আশঙ্কা করছেন। ক্ষতিগ্রস্ত হলে আগামী বছর শিম চাষ করবেন না বলে জানিয়েছেন।

জেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, এই জেলায় বারি-২, আশ্বিনা ও লনডক জাতের শিমগুলো বেশি চাষ হয়। ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায় বেশিরভাগ কৃষক দেশীয় জাতের শিম চাষ করেন। গত বছর জেলায় ২ হাজার ৯৪৫ হেক্টর জমিতে শিম চাষ হয়েছে। এরমধ্যে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায় ৩৯০ হেক্টর জমিতে শিম চাষ হয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর ময়মনসিংহের উপপরিচালক ড. নাছরিন আক্তার বানু বলেন, আমরা নিয়মিত কৃষকদের ক্ষেত পরিদর্শন করছি। কীভাবে রোগ প্রতিরোধ করতে হবে, সে পরামর্শ দিচ্ছি। আশা করছি, শিমের পচন কিছুটা কমে যাবে এবং এবারো শিমের বাম্পার ফলন হবে।

আরও পড়ুন


Discover more from সমবানী

Subscribe to get the latest posts sent to your email.

আর্কাইভ
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
১০১১১৩
১৫১৬১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭
৩০৩১  

এই ক্যাটাগরির আরো খবর

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকিজ ব্যবহার করে। আমরা ধরে নেব আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি চাইলে অপ্ট-আউট করতে পারেন৷ গ্রহণ করুন আরও পড়ুন

Discover more from সমবানী

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading