হিলিতে তীব্র গরমে বেড়েছে রোগীর সংখ্যা
প্রতিনিধিঃ
গোলাম মোস্তাফিজার রহমান মিলন , হিলি, দিনাজপুর।

বৈশাখের তীব্র তাপদাহে দিনাজপুরের সীমান্তবর্তী হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। চিকিৎসকরা বলছেন, বৈশাখের তীব্র গরমের কারণে এমন সমস্যা হচ্ছে।
অন্যদিকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকটের কারণে ভর্তি রোগীসহ বহির বিভাগের রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিতে চিকিৎসক ও নার্সদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।
জানা গেছে, গত ১৫ দিনে ৭০-৮০ জন রোগী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে ভর্তি হয়েছে।
ডায়রিয়া রোগীদের স্যালাইন, সঠিক চিকিৎসা ও পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন চিকিৎসক-নার্সরা।
আজ মঙ্গলবার সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, ডায়রিয়া ওয়ার্ডের প্রায় সব বেডে রোগীরা ভর্তি হয়ে আছে। এ ছাড়া গরমে নানা রোগে আক্রান্ত ৫০ শয্যার হাসপাতালে ভর্তি আছে ৬০ জন রোগী। বেড না পেয়ে মেঝেতে শুয়ে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন ভর্তি রোগীরা।
আজ মঙ্গলবার হাসপাতালের রেজিস্ট্রার মোতাবেক বহির বিভাগে চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করেছেন বিভিন্ন বয়সের ৩৪৬ জন। এদের মধ্যে পুরুষ ১১০, মহিলা ১৭৩ জন ও শিশু রয়েছে ৬৩ জন।
হাসপাতালের রেকর্ড অনুসারে, সোমবার ১২ মে হাসপাতালে নতুন ভর্তিসহ ৬০ জন ভর্তি ছিলেন। এছাড়া বেশ কয়েকজন রোগী চিকিৎসা সেবা নিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ছেড়েছেন।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত নার্স মাহফুজা খাতুন জানান, স্বাভাবিক অবস্থায় প্রতিদিন ৩/৪ জন ডায়রিয়া রোগী হাসপাতালে ভর্তি থাকে। কিন্তু গত কয়েক দিনে হঠাৎ করেই ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বেড়ে যায়। প্রতিদিন ডায়ারিয়া আক্রান্ত হয়ে নতুন করে ৮-১০ জন করে রোগী ভর্তি নিতে হচ্ছে। ডায়রিয়া আক্রান্তদের মধ্যে শিশু ও বয়স্করা রয়েছেন।
তিনি জানান, হঠাৎ করে আবহাওয়া পরিবর্তন ও বৈশাখের তীব্র গরমের কারণে শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে।
গত ১৫ দিনে প্রায় ৭০-৮০ জন ডায়রিয়া রোগী চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করেছেন।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেঝেতে ভর্তি হয়ে থাকা রোগী হাসনা বেগম বলেন, গত দুদিন আগে হঠাৎ করে আমার ছেলের বমি ও পাতলা পায়খানা শুরু হয়। হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। বেড না থাকায় মেঝেতে বেড তৈরি করে চিকিৎসা নিচ্ছি। এখন বর্তমানে অনেকটা সুস্থ।
আরেক রোগী বলেন, বৈশাখ মাসের তীব্র গরমে ইরি ধান কাটা-মারার কাজ করেছি। হঠাৎ গতকাল থেকে আমার পেটের ব্যথা ও পাতলা পায়খানা। এরপর হাসপাতালে ভর্তি হয়ে স্যালাইন ও চিকিৎসা নিয়েছি।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি হওয়া এক শিশুর অভিভাবক বলেন, গত দুই-তিন দিন আগে আমার এবং আমার বাচ্চার শ্বাসকষ্ট সমস্যার কারণে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি।
হাকিমপুর হিলি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এর স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ইলতুতমিশ আকন্দ বলেন, বৈশাখ মাসের তীব্র গরমে হাসপাতালে বেশ কিছু দিন থেকে ডায়রিয়া রোগী ভর্তির সংখ্যা বেড়েছে। হঠাৎ আবহাওয়া পরিবর্তন ও তীব্র গরমের কারণে মা, শিশু ও বয়স্করা ডায়রিয়া রোগে ভুগছে বলে মনে করছি। তবে আমাদের হাসপাতালে কলেরা স্যালাইন পর্যাপ্ত থাকায় এখন পর্যন্ত কোনো সমস্যা হচ্ছে না।
তিনি আরো বলেন, এই গরমে ভাজা পোড়া খাবার কম খেতে হবে, খাবারের আগে সাবান দিয়ে হাত ভালোভাবে ধৌত করতে হবে এবং অবশিষ্ট খাবার ভালো ভাবে ঢেকে রাখতে হবে। তীব্র গরমে বেশি বেশি পানি ও খাবার স্যালাইন খেতে হবে। সেই সঙ্গে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হলে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে এসে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসা নিতে হবে।
আরও পড়ুন
- বোরহানউদ্দিনে ইসলামী আন্দোলনের গণ সমাবেশ
- ভোলায় বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্যসহ ৫ কারবারি আটক
- বোরহানউদ্দিনে খাবারে নেশা খাওয়াইয়া অচেতন করে ২ লক্ষ টাকা চুরি অসুস্থ্য ৫ জন
Discover more from সমবানী
Subscribe to get the latest posts sent to your email.