চরফ্যাসনে চিকিৎসক আঁখি আক্তারের অবহেলায় নবজাতকের মৃত্যু
প্রতিনিধিঃ
খুরশীদ আলম, চরফ্যাশন, ভোলা

ভোলার চরফ্যাশনে বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক আঁখি আক্তারের অবহেলায় নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত বছরও একই চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসায় একটি প্রসূতির মৃত্যু হয়েছিল।
রবিবার (৫ অক্টোবর) বিকাল ৪ টার দিকে চরফ্যাশন উপজেলার করিমজান মহিলা মাদ্রাসা রোডের ব্যক্তিগত মালিকানাধীন ইকরা হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এই ঘটনা ঘটে।
নিহত নবজাতকের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রবিবার সকাল ১০ টার দিকে সন্তানসম্ভবা তাছলিমা বেগমকে চরফ্যাশন হাসপাতাল রোডে অবস্থিত মেঘনা ল্যাব থেকে ডাক্তার আঁখি আক্তারের পরামর্শক্রমে ইকরা হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি করা হয়। এরপর ডাক্তার আঁখি আক্তার ওই হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন না; নার্স ও আয়া দিয়ে ডেলিভারি সম্পন্ন করেন। বিকেল সাড়ে ৩ টার দিকে ডেলিভারির জন্য রুমে নেওয়া হলেও পরিবারকে কোনো তথ্য জানানো হয়নি। তখন নবজাতকের মৃত্যু হয়।
নিহত নবজাতকের পিতা মো. বাবুল জানান,যদি নরমাল ডেলিভারি সম্ভব না হতো, ডাক্তার আমাদের জানাতেন। আমরা চাইলে সিজার বা অন্য হাসপাতালে নিতে পারতাম। কিন্তু ডাক্তার আঁখির অবহেলার কারণে আমাদের সন্তান মারা গেছে। আমরা তার বিচার চাই।
জানা যায়, ২০২৪ সালের ৬ সেপ্টেম্বরে চরফ্যাশন হাসপাতাল রোডের প্রাইভেট ক্লিনিক সেন্ট্রাল ইউনাইটেডে হাসপাতালে একই চিকিৎসক আঁখি আক্তারের হাতে আনোয়ার হোসেনের মেয়ে মুন্নী আক্তার মারা গিয়েছিলেন। তখন জনরোষের পয়ে পালিয়ে যান চিকিৎসা আঁখি। কিছুদিন গাঁ ঢাকা দিয়ে ফের তিনি ইকরা হাসপাতালে যোগদান করে চিকিৎসা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, চরফ্যাশনের বিভিন্ন এলাকায় অনুমোদনহীন ক্লিনিক রয়েছে, যেখানে অনভিজ্ঞ চিকিৎসকরা রোগী দেখেন এবং স্বাভাবিক প্রসবেও পরিবারকে ভয় দেখিয়ে অতিরিক্ত অর্থের জন্য সিজার করানো হয়।
স্থানীয় মাকসুদ নামে এক ব্যক্তি জানান, ডাক্তার আঁখি আক্তার একজন টিকটকার। তিনি সবসময় টিকটক নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। তার মতো ডাক্তার চরফ্যাশনে থাকার যোগ্যতা রাখেন না। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানান তিনি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে ইকরা হাসপাতালে গেলে ডাক্তার আঁখি আক্তারকে পাওয়া যায়নি। তার ব্যবহৃত ফোনে কল দেওয়া হলে সহকারী ফোন রিসিভ করে বলেন, ম্যাডাম ওটিতে রয়েছে। হাসপাতালে বাচ্চা মারা গেলে কি হয়েছে, বাচ্চা মারা যাইতে পারে, এটা কি ম্যাডামের দোষ। এরপর ফোন কেটে দেওয়া হয়।
ইকরা হাসপাতালের পরিচালক পলি বেগমকে পাওয়া যায়নি। তবে তার স্বামী কাদের জানান, নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। ডাক্তার আঁখি আক্তারকে হাসপাতালে রাখা হবে কি না তা শিগগিরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. শোভন কুমার বশাক বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
ভোলা সিভিল সার্জন ডা. মনিরুল ইসলাম জানান, বেসরকারি ডা. আঁখি আক্তারের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শেয়ার:
- Click to share on Facebook (Opens in new window) Facebook
- Click to share on X (Opens in new window) X
- Click to share on LinkedIn (Opens in new window) LinkedIn
- Click to share on Reddit (Opens in new window) Reddit
- Click to share on X (Opens in new window) X
- Click to share on Tumblr (Opens in new window) Tumblr
- Click to share on Pinterest (Opens in new window) Pinterest
- Click to share on Pocket (Opens in new window) Pocket
- Click to share on Threads (Opens in new window) Threads
- Click to share on WhatsApp (Opens in new window) WhatsApp
Discover more from সমবানী
Subscribe to get the latest posts sent to your email.